ইরান-সিরিয়া সম্পর্কের ভবিষ্যৎ
সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ক্ষমতার পালাবদলের পর ইরানের সিরিয়ানীতি কেমন হবে— তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা ও পর্যবেক্ষণ চলছে। ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের ইউনিভার্সিটির অর্থনীতির অধ্যাপক মোরতাজা আফগেহ মনে করেন, ইরান-সিরিয়া সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করবে সিরিয়ার নতুন সরকারের ইসরায়েলের প্রতি অবস্থান ও ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক বোঝাপড়ার ওপর। ইরান এবং সিরিয়ার বিরোধী দলগুলোর মধ্যকার সামরিক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপট এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।
ইরানের অবস্থান
ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের দৃঢ় সমর্থন জানিয়েছেন ইতোমধ্যে। তেহরানের মতে, সিরিয়ার ভাঙন বা অস্থিতিশীলতার অপচেষ্টা শুধু সিরিয়া নয়, গোটা অঞ্চলের জন্যি ক্ষতিকর সাব্যস্ত হবে।
ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক ও সিরিয়া
সম্প্রতি ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে। ইরান এই হামলাগুলোকে সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের জন্য স্পষ্ট হুমকি বলে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ আব্বাস আসলানি জানান, ইরান মনে করে ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপ সিরিয়ায় বিশৃঙ্খলা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। এজন্য তেহরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোকে সিরিয়ার নতুন সরকারকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
অর্থনৈতিক স্বার্থে ইরানের লক্ষ্য
অর্থনৈতিক দিক থেকেও সিরিয়া ইরানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পেমান মোলভি—যিনি অর্থনৈতিক হিসাব ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার অধ্যাপক এবং ইরান ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা—মনে করেন ইরান মিত্র দেশগুলোতে বিনিয়োগের মাধ্যমে রাজনৈতিক শক্তি ধরে রাখার চেষ্টা করছে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটি বিকল্প বেছে নিলে অন্যটির সুযোগ হারানোর ঝুঁকি থাকে। মোলভি আরও বলেন, সিরিয়ার অর্থনৈতিক প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করছে ইরান। বিনিয়োগের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে। সিরিয়া পুনর্গঠনের প্রয়োজনে যে কোনো বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সিরিয়া ও ইরানের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে রাজনৈতিক কূটনীতি ও অর্থনৈতিক সমন্বয়ের ওপর। ইরান তাদের আঞ্চলিক অবস্থান অটুট রাখতে সিরিয়ানীতির ক্ষেত্রে কৌশলগত অবস্থানই গ্রহণ করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আল জাজিরা থেকে অনুবাদ করেছেন আয়মান সাদিক