মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে ইরানের মুদ্রা রিয়ালের মান ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ডলারের বিপরীতে রিয়ালের মান নেমে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৭৭ হাজারে। ট্রাম্পের নির্বাচনের সময় এটি ছিল ৭ লাখ ৩ হাজার।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ট্রিগার মেকানিজম’ সক্রিয় করার ঘোষণাও সংকট বাড়িয়েছে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সহযোগিতার অভাবের অভিযোগে নেওয়া এ পদক্ষেপের সঙ্গে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের খবর ইরানের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে।
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সম্প্রতি সরকারি বিনিময় হার বাতিল করে সরবরাহ ও চাহিদার ভিত্তিতে মুদ্রার দাম নির্ধারণের নীতি গ্রহণ করেছে। প্রাথমিকভাবে ডলারের দাম ৬ লাখ রিয়ালে স্থিতিশীল থাকলেও মুক্ত বাজারে তা দ্রুত বেড়ে যায়।
মুদ্রার স্থিতিশীলতা আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন করে ২২ কোটি ডলার বাজারে ছেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদ রেজা ফারজিন বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো এবং বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই নীতি উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে সহায়ক হবে। তবে নিষেধাজ্ঞা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা সংকট উত্তরণের বড় বাধা। তাদের মতে, মুদ্রার মান শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণ নীতির ওপর নির্ভরশীল নয়; নিষেধাজ্ঞা শিথিল করাই প্রধান সমাধান।
সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তনের ফলে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ইরান বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাশার আল-আসাদের পতন ইরানের কৌশলগত অবস্থান দুর্বল করে দিতে পারে।
ইরানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলো সাময়িকভাবে মুদ্রার দরপতন রোধ করতে পারলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে নিষেধাজ্ঞা পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর।
সূত্র: আল জাজিরা, এপি