জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা ও কর্মসংস্থান সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) কমিশনার-জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য দেশ ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি জানান, এসব দেশ একদিকে ফিলিস্তিনিদের সহায়তা থেকে বঞ্চিত করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে, অন্যদিকে ইসরায়েলের সংসদে ইউএনআরডব্লিউএ বিলুপ্তির লক্ষ্যে উত্থাপিত আইন নিয়েও প্রশ্ন করছে।
এদিন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরায়েলের মানবিক দায়-দায়িত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) মতামত চাওয়া হয়েছে। প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের মানবিক সংকট তুলে ধরে ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় তার দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
নরওয়েসহ আরও অন্তত ২২টি দেশ প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। এতে ১৩৭টি দেশ সমর্থন জানায়, ১২টি দেশ বিরোধিতা করে এবং ২২টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
ফিলিপ লাজারিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের বেশির ভাগ সদস্য দেশের এই সংহতি প্রশংসনীয়। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক অগ্রগতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলি সংসদের প্রস্তাবিত আইনগুলো ইউএনআরডব্লিউএ বিলুপ্তির চেষ্টা করছে। এতে গাজার বিপর্যস্ত অঞ্চলে বসবাসরত লাখো শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি জীবনরক্ষাকারী সহায়তা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।’
এর আগে, গত ২৮ অক্টোবর ইসরায়েলের সংসদ (কেনেসেট) ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম ফিলিস্তিনি অধিকৃত অঞ্চলে নিষিদ্ধ করতে একটি আইন পাস করে। পরে, ৪ নভেম্বর ইসরায়েল জাতিসংঘকে জানায়, সংস্থাটির কার্যক্রম সম্পর্কিত চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে তিন মাসের মধ্যে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম নিষিদ্ধ হবে।
গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত জানিয়েছিল, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি অবৈধ এবং এটি অবিলম্বে শেষ করতে হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১ লাখ ৫২ হাজারের বেশি মানুষ হতাহত হয়েছেন। ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ধ্বংসযজ্ঞ ও দুর্ভিক্ষে প্রাণ গেছে বহু শিশু ও বৃদ্ধের।
আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের দেওয়া দুই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে উপেক্ষা করে ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে এ পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।
সূত্র : আনাদোলো