জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক এনজিও গুলো বারবার এই বলে সতর্ক করছে যে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমরা ২০১৭ সালের পর বর্তমান সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ হুমকির মুখে রয়েছে। গত ২৫শে আগস্ট ছিল ২০১৭ সালের সেই ভয়াবহ গণহত্যার সাত বছর, যেদিন প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহন করে।
পরবর্তীতে ২০১৭ সালের বাকি সময়ে সর্বমোট ১২ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসী জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির যৌথ অত্যাচারে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিল।
আরাকান রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির (এএ) দ্বারা রোহিঙ্গারা একাধারে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ ও নানাবিধ নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি কর্তৃক গত মাসের ৫ আগস্ট মংডুতে ড্রোন হামলায় প্রায় ৩০০ জন নিরপরাধ রোহিঙ্গা নারী ও শিশু শহীদ হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৬.৩ লাখ রোহিঙ্গা এখন মিয়ানমারে অবরুদ্ধ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।
২০১৭ থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখের অধিক রোহিঙ্গা মুসলিম আরাকান আর্মির নির্যাতনে তাদের ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে এবং হাজার হাজার রোহিঙ্গা নির্মমভাবে গণহত্যার শিকার হয়েছে, যা বর্তমানে মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
অবস্থা এতই ভয়াবহ যে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এটিকে “জেনোসাইড ২.০”, বলছে। একদিকে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি একদিকে রোহিঙ্গাদের যেমন ঘরছাড়া করছে। যার ফলে প্রায় ৩.২ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অন্যদিকে জান্তা সরকার মানবিক সহায়তাও অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা মাজলুমদের রাজনৈতিক, কুটনৈতিক, সামরিকসহ সার্বিক সহয়তার মাধ্যমে এই সন্ত্রাসী আরাকান আর্মিকে রুখে দিয়ে সকল রোহিঙ্গাদের তাদের মাটিতে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করা।
অন্যথায় একদিকে যেমন বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা তাদের ভিটেমাটিতে ফিরে যেতে পারবে না, অন্যদিকে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি বাংলাদেশের বান্দরবনকে আলাদা করার লড়াইয়ে তাদের জাতিগোষ্ঠী মগদের অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।