আলহামদুলিল্লাহ, তুফানুল আকসার এক বছর পেরিয়ে গেছে। মহান ৭ই অক্টোবর এমন এক মুবারকময় দিন যেদিন প্রথমবারের মত ইহুদিদের তথাকথিত নিরাপত্তার পশ্চিমা ন্যারেটিভকে চুরমার করে দিয়েছে। এই ন্যারেটিভ এটাই ছিল যে, ইহুদিদের নিরাপত্তা দুর্ভেদ্য ও সমৃদ্ধ, তারা অজেয়, কেউ তাদের হারাতে পারবে না। কিন্তু তুফানুল আক্বসা তা ধ্বংস করে দিয়েছে। আজীবনের জন্য তাদের এই ন্যারেটিভ মুখ থুবড়ে পড়েছে। এই ন্যারেটিভ শুধু মুসলমানদেরই নয়, বরং পৃথিবীবাসীকে নিরুৎসাহিত এবং অপমান করতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিলো। তুফানুল আক্বসা এই বয়ান ভেঙ্গে দিয়ে তাদেরকে সবদিকথেকে ভারসাম্যহীন করে দেয়।
সন্ত্রাসী ইসরাইল সারা দুনিয়া থেকে ইহুদিদের খুঁজে খুঁজে এনে পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপন করিয়ে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে প্রসারিত হতে শুরু করেছিলো। কিন্তু তুফানুল আকসার অপারেশন তাদের সেই পরিকল্পনাকে নস্যাৎ করে দেয়। আগের সমস্ত যুদ্ধ ছিল ইহুদীদের দৃষ্টিতে প্রতিরোধ ও দমনের যুদ্ধ। কিন্তু তুফানুল আক্বসাই একমাত্র যুদ্ধ যেটা সন্ত্রাসী ইসরাইলের অস্তিত্বের মূলে শক্ত আঘাত হেনেছে। তুফানুল আক্বসা প্রমাণ করে দিয়েছে, এই অবৈধ রাষ্ট্র মাকড়সার জালের চেয়েও দুর্বল। এর সবচেয়ে বড় প্রমাণ সব পশ্চিমা দেশ বিশেষ করে আমেরিকার আর্থিক এবং সামরিক সহায়তা। এতদিন সবাই এটা জানতো যে সবকিছু সন্ত্রাসী ইসরাইলের। পশ্চিমা বিশ্বের এই সমর্থন না থাকলে এতদিনে সন্ত্রাসী ইসরাইল তাসের ঘরের মত হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়তো। কিন্তু আমেরিকার আদাজল খেয়ে ইজরাইল রক্ষায় নেমে পড়া তাদের দুর্দশাকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, দুঃখজনক ব্যাপার হলো মুসলিম নামধারী আরব বিশ্ব এই ইস্যুতে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, উল্টো তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী ইসরাইলের পক্ষে সমর্থন দিয়ে আসছে। বিনোদনে ভরা এই দুনিয়ায় আমরা মুসলিমরাও তাদের কথা একপ্রকার ভূলে গেছি। এতকিছু সত্ত্বেও ফিলিস্তিনের মুজাহিদীনরা আল্লাহর সাহায্যে অবিচল থেকে সাহসের সাথে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। সীমিত সামর্থ্যশক্তি, সমস্ত কুফফার শক্তির ঐক্যবদ্ধ অবস্থান, আরব বিশ্বের নীরবতা সত্ত্বেও গাজার মুজাহিদীনদের বীরত্ব প্রমাণ করে, তাদেরকে সন্ত্রাসী ইসরাইলরা হারাতে পারবে না ইন শা আল্লাহ। আজ হোক বা কাল, ইন শা আল্লাহ খুব দ্রুতই সন্ত্রাসী ইসরাইলের সাম্রাজ্যের পতন হবে। সেদিন বেশী দূরে নয়।
আমাদের উচিৎ, ফিলিস্তিন, আরাকান, কাশ্মীর, উইঘুর, ভারতসহ পৃথিবীর নানা স্থানে নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে কথা বলা। তাদের জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে সহায়তা করা। অন্যথায়, কাল হাশরের ময়দানে তাদের প্রতি আমাদের করণীয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আমরা কোনো জবাব দিতে পারবো না। তাই আসুন, আল্লাহর পক্ষ থেকে দেয়া দায়িত্বের অংশ হিসেবে মজলুমদের পাশে দাড়াই, তাদেরকে মুক্ত করতে নিজেদের সবটুকু দিয়ে দেই।