৫ ই আগষ্টে খুনি হাসিনার পতনের পর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় হিন্দুত্ববাদী ভারত। ভারতের শাসক থেকে শুরু করে বিরোধী দল এমনকি তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও বেছে নেয় নানান প্রোপাগান্ডার আশ্রয়। প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতন, জঙ্গি নাটক সহ নানা উপায়ে বাংলাদেশকে ফাঁদে ফেলার কৌশল সাজানো হয়।
কিন্তু সারাবিশ্ব দেখেছে কীভাবে একটি সংখ্যালঘু জাতিকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া কভার করেছে বাংলাদেশের মুসলিমরা কীভাবে হিন্দুদের আশ্রয় দিয়েছে। যার ফলে ভারতের গোদী মিডিয়ার সমস্ত ভন্ডামী আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফাঁস হতে থাকে।
নিজেদের ফাঁদে যখন নিজেই কাঁদে
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালানোর পাশাপাশি ভারতে মেডিক্যাল ভিসা থেকে শুরু করে পর্যটক ভিসা নিয়ন্ত্রণ , ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল, স্থলপথে আমদানির নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল দেয়।
যার ফলে ভারতের ডাক্তার থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের শুরু হয় দুর্দিনের যাত্রা : ভারতের মেডিকেল, হোটেল, খাবারের দোকানগুলো খালি পরে থাকে। সীমান্তের ওপারে রপ্তানি করতে না পেরে রাস্তায় পরে থাকতে দেখা যায় নানান জিনিসপত্র।
এছাড়াও কেনাকাটার দোকান, সীমান্ত এলাকায় বাসের কাউন্টার, হোটেল-রেস্তোরা একের পর এক বন্ধ হয়ে যায়। সর্বশেষ কোরবানির ভারতীয় ৩০ লাখ পশু আটকে যায়। যার ফলে পশু আশানুরূপ দাম থেকে অর্ধেক দামে বেঁচতে হয় ব্যবসায়ীদের।
বিকল্প পন্থায় বাংলাদেশ
অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা আসার পর সিলেট ও কক্সবাজারে ফ্রেইটার চালু হয়, ফলে কার্গো সক্ষমতা তিনগুন বৃদ্ধি পায়। মোংলা বন্দরে চীনা বিনিয়োগ, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরে জাপানি বিনিয়োগে গতি পায়। চীনে চালু হয় বাংলাদেশীদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্হা।
থাইল্যান্ড, ইরান, পাকিস্তান চিকিৎসা সেবা দিতে উদ্যোগ নেয়। মালেশিয়া, ওমান, আফ্রিকায় রপ্তানি করবে গরুর গোশত। ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হওয়ায় পরও বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় এবার ২০ লাখ ৬৮ হাজার পশু বেশি রয়েছে।
চোরাবালিতে আটকে গেছে ভারত
হিন্দুত্ববাদী ভারত ধর্মীয় আগ্রাসন, রাজনৈতিক পক্ষপাত ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি একচোখা নীতির কারণে দেশটির জনগণই এখন তার নেতিবাচক প্রভাব ভোগ করছে। এর ফলে চিকিৎসা সেবা বন্ধ, হঠাৎ পণ্য রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, এবং সীমান্তে পণ্য আটকে দেওয়ার মতো কার্যকলাপের মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে ভারত।
এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ বিকল্প পথ খুঁজতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ এখন শুধু ভারতনির্ভর নয়, বরং বিকল্প জোট, বিকল্প বাজার ও বিকল্প স্বপ্নের দিকে এগোচ্ছে। বাংলাদেশ এখন নেপাল ও ভুটানের মতো দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী ভারতের সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কাছে বাংলাদেশ মাথানত করেনি।
ভারত যে কৌশল নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও চাপ প্রয়োগ করছে, তা আজ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। ভারতীয় উগ্র শাসকগোষ্ঠী এবং গোদী মিডিয়া মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় ব্যস্ত থাকলেও, আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও বাস্তবতা তাদের সব অপপ্রচার ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে।
সীমান্তে বাণিজ্য বন্ধ, ভিসা জটিলতা এবং মানুষের উপর অযথা নির্যাতনের নামে যে চাপ সৃষ্টি করেছে ভারত, তা শেষপর্যন্ত তাদের নিজস্ব অর্থনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভারত যদি তার আগ্রাসী, একতরফা এবং দ্বৈতচরিত্রপূর্ণ নীতিকে অব্যাহত রাখে, তাহলে ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে তার পতন হবে।