একজন মুসলিমের মুসলিম হওয়ার পিছনে একমাত্র যে আদর্শ লালন করা তার জন্য ফরজ তা হল রাসুল সাঃ এর আদর্শ। হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর আদর্শ ছাড়া আর যত আদর্শ পৃথিবীতে আছে সবগুলো শয়তানের আদর্শ।
আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (চরিত্রের) মধ্যে রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ।’ (সুরা আহযাব : আয়াত ২১)
এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানব জাতীর জন্য বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ দিয়ে সবাই উপকৃত হতে পারবে না। বরং তারাই উপকার পাবে যারা-
> আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে।
> আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে।
এটি ব্যাপক নির্দেশমূলক আয়াত। মুমিন মুসলমানের জীবনের সব কথা কাজ প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণ আবশ্যক। তা হতে পারে ইবাদত সম্পর্কিত। সামাজিক বিষয় সম্পর্কিত। জীবিকা সম্পর্কিত। রাজনীতি বা রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত। এক কথা মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রিয় নবি নিঃশর্ত অনুসরণ ও অনুকরণ প্রত্যেক মুসলমানের একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
বর্তমানে মুসলমানদের অবস্হা এমন যে তারা রাসুল সাঃ এর আদর্শ বাদ দিয়ে তারা বিভিন্ন সেলিব্রিটির আদর্শ লালন করে। তারা নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত এর পাশাপশি তারা কেউ মেসি,নেইমার, রোনালদোর আদর্শ, মুজিববাদী আদর্শ, গনতন্ত্রের আদর্শ, নায়ক, গায়কের আদর্শ লালন করে। তারা তাদেরকে ভালবেসে তাদের অনুকরণ – অনুসরন করে এবং তাদের মত হতে চেষ্টা করে।
হাদিসে এসেছে:-
“যে ব্যক্তি কোনো জাতির অনুকরণ, অনুসরণ ও সামঞ্জস্য বিধান করবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে”
(ইমাম আহমদ, আল-মুসনাদ: ২/৫০; আবু দাউদ রহ. বর্ণনা করেছে উৎকৃষ্ট সনদে, হাদীস নং-৪০৩১; আর আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন, ‘সহীহ আল-জামে‘ আস-সাগীর’, হাদীস নং-৬০২৫।)
হযরত মুহাম্মদ সা: এর আদর্শ বাদ দিয়ে পৃথিবীতে যত দল, মত, তন্ত্র, মন্ত্র এসেছে তা হল শয়তানের আদর্শ।
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন:-
“শয়তান তোমাদের শত্রু। অতএব তাকে শত্রুরূপেই গ্রহণ কর। সে তার অনুসারীদের আহ্বান করে যেন তারা জাহান্নামী হয়।” [ফাতির : ৬]
একজন মুসলমানের আদর্শ শয়তানের আদর্শের সাথে মিলে যাওয়া মোটেও সমীচীন নয়।
সুতরাং মনে রাখতে হবে:
প্রিয় নবিকে আদর্শ হিসেবে মেনে নেয়া কিংবা ভালোবাসার কথা মুখে মুখে দাবি করার বিষয় নয়। বরং তার কথা-কাজ পুরোপুরি অনুসরণ-অনুকরণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা। আর আল্লাহ তাআলা কুরআনের অন্য আয়াতেও এ নির্দেশই দিয়েছেন-
– ‘রাসুল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর।’ (সুরা হাশর : আয়াত ৭)
– (হে রাসুল!) বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তাহলে আমার অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)
সুতরাং শুধু মুখে মুখে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসা নয়, বরং কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা অনুযায়ী প্রিয় নবিকে ভালোবাসা ও তার অনুসরণ ও অনুকরণ করা, আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করা এবং প্রত্যেক কাজে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করাই ঈমানের একান্ত দাবি।