উত্তর গাজায় ৬৬ দিন ধরে ত্রাণকার্যক্রম কার্যত বন্ধ থাকায় প্রায় ৭৫ হাজার ফিলিস্তিনি চরম সংকটের মুখে পড়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই অঞ্চলের বাসিন্দারা খাবার, পানি এবং চিকিৎসাসেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত।
ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের কারণে বেইত লাহিয়া, বেইত হানুন ও জাবালিয়া এলাকায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস (OCHA) জানিয়েছে, এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা তীব্র খাদ্য সংকট এবং চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে বেইত লাহিয়ার তিনটি স্কুল থেকে ৫ হাজার ৫০০ মানুষকে গাজা শহরে সরিয়ে নিতে হয়েছে।
উত্তর গাজায় খাদ্য সংকট এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরো গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘের সহায়তায় মাত্র চারটি বেকারি চালু রয়েছে, যা গাজা শহরে অবস্থিত। ফলে উত্তর গাজার বাসিন্দারা কোনো ধরনের খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না।
জাতিসংঘের গাজা পুনর্গঠনের সমন্বয়কারী সিগ্রিড কাগ বলেছেন, ‘গাজার মানুষ মানবিক বিপর্যয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন উত্তর গাজায় সহায়তাসামগ্রী নিয়ে যাওয়া কনভয়গুলোর প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি রাফা সীমান্ত খুলে দেওয়ারও অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে বাণিজ্যিক পণ্য সরবরাহ পুনরায় চালু করা যায়।
অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৮৬ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬ হাজার ১৮৮ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক মরদেহ আটকে রয়েছে, ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
উদ্ধারকাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাঁধা থাকায় এবং সহায়তার অভাবে উত্তর গাজার মানবিক সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাজ চালিয়ে গেলেও সংকটের সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দৃশ্যমান।
সূত্র: এপি, আরটি