উত্তর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় গত ৫ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত অথবা নিখোঁজ হয়েছেন। বুধবার গাজার প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসল এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে মাহমুদ বাসল বলেন, ইসরায়েলের স্থল অভিযানে উত্তর গাজায় এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘উত্তর গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নির্বিচারে গণহত্যা চালাচ্ছে। এতে নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
মাহমুদ বাসল সতর্ক করে বলেছেন, গাজার প্রতিরক্ষা সেবা যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ইসরায়েলি হামলায় প্রতিরক্ষা বিভাগের ৭২টি অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার যানবাহনের মধ্যে ৪০টি ধ্বংস হয়ে গেছে। বাকি যানবাহনগুলো ব্যবহারের অযোগ্য।
তিনি বলেন, ‘জ্বালানি ও সরঞ্জামের অভাবে গাজার ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।’
গাজার এই মুখপাত্র আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা, জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে জ্বালানি ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে তিনি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা ও মানবিক সহায়তা দ্রুত সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
৫ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তবে ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, এই অভিযান তাদের উচ্ছেদের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এখনো ১১ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।
ইসরায়েলি অভিযানের কারণে গাজায় মানবিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। খাদ্য ও ওষুধের অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা মারা যাচ্ছেন। পরিস্থিতি দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইউআভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। তবে এসব উপেক্ষা করেই ইসরায়েল গাজায় অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি