সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সংঘর্ষ আরও রক্তক্ষয়ী হয়ে উঠেছে। দুই দিনে তীব্র লড়াইয়ে ১৬০ জনের বেশি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় অধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যম।
উত্তর দারফুরের কাবকাবিয়া শহরের একটি ব্যস্ত বাজারে সোমবার বিমান হামলায় ১০০ জনের বেশি নিহত হন। আহত হন শতাধিক মানুষ, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। অধিকার সংগঠন ‘ইমার্জেন্সি লইয়ার্স’ এই হামলার জন্য সেনাবাহিনীকে দায়ী করলেও সেনাবাহিনী তা অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, আরএসএফের সামরিক স্থাপনাগুলোতে হামলা করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব।
মঙ্গলবার রাজধানী খার্তুমের পাশের শহর ওমদুরমানে আরএসএফের গোলাবর্ষণে অন্তত ৬৫ জন নিহত হন। গভর্নর আহমেদ উসমান হামজা এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ উল্লেখ করে জানান, যাত্রীবাহী একটি বাসে শেলের আঘাতে ২২ জন নিহত হন। এ ছাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ২২ জনের মৃত্যু হয়।
এ ছাড়া উত্তর দারফুরের জামজাম বাস্তুচ্যুত শিবিরে আরএসএফের গোলাবর্ষণে পাঁচজন নিহত হন। অন্যদিকে উত্তর করদোফানে বিধ্বস্ত একটি ড্রোন বিস্ফোরণে ছয়জনের প্রাণহানি ঘটে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে এই সংঘর্ষ শুরু হয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, উভয় পক্ষই বেসামরিক জনগণের ওপর হামলাসহ যুদ্ধাপরাধের মতো কার্যকলাপ চালাচ্ছে।
২০ মাস ধরে চলমান এই সংঘর্ষে হাজারো মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি মানুষ। সংঘর্ষের ফলে সুদানে বিশ্বের অন্যতম বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার মানুষ দক্ষিণ সুদানে পালিয়ে যাচ্ছে। সংঘর্ষকবলিত এলাকায় ৮০ শতাংশেরও বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
এ অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সূত্র: আল জাজিরা