সিরিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। সিরিয়ার প্রাচীন ইতিহাস ও ভৌগলিক অবস্থান কৌশলগতভাবে বিশেষ গুরুত্ব রাখে। দামেশক— পৃথীবির অন্যতম প্রাচীন শহর, সিরিয়ার রাজধানী। সিরিয়ার সরকারি ভাষা আরবি, শাসনব্যবস্থা প্রজাতান্ত্রিক এবং মুদ্রা সিরিয়ান পাউন্ড।
প্রশাসনিক বিভাগ ও জনসংখ্যা
সিরিয়া ১৪টি প্রদেশে বিভক্ত, যার মধ্যে হিমস (হোমস) সবচেয়ে বড়। অন্যান্য প্রদেশগুলো হলো আলেপ্পো বা হালব, রাকা, হামা, ইদলিব, সুইদা, লাতাকিয়া, তর্তুস, দেইর আল-জোর, হাসাকা, কুনেইত্রা, দারআ, রিফ দামেশক এবং রাজধানী দামেশক।
সিরিয়ার জনসংখ্যা প্রায় ২১ মিলিয়ন (বিশ্বব্যাংকের মতে), তবে এটি ২৬ মিলিয়ন হতে পারে (জেসুর সেন্টার ফর স্টাডিজ)। এর মধ্যে ৮ মিলিয়ন প্রবাসী এবং ১ মিলিয়ন নিহত বা নিখোঁজ।
ভৌগোলিক অবস্থান ও কৌশলগত গুরুত্ব
সিরিয়া এশিয়া, ইউরোপ এবং ভূমধ্যসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। সিরিয়ার কৌলগত অবস্থান দেশের বাণিজ্যিক ও সামরিক গুরত্ব বাড়িয়েছে।
ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও জনগোষ্ঠী
সিরিয়ার বেশিরভাগ মানুষ সুন্নি মুসলিম, যারা দামেশক, হোমস, আলেপ্পো, রাকা ও দেইর আল-জোরে বাস করে। এছাড়া আলাভি শিয়া সম্প্রদায় উপকূলীয় এলাকায় এবং দ্রুজ সম্প্রদায় সুইদা ও গোলানে বসবাস করে। খ্রিস্টানরা পুরো দেশে ছড়িয়ে আছেন।
সীমান্ত ও উপকূল
সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূল ১৮৩ কিলোমিটার, এবং স্থলসীমান্ত ২২৫৩ কিলোমিটার। এর মধ্যে তুরস্কের সঙ্গে ৯০০ কিলোমিটার, ইরাকের সঙ্গে ৬০০ কিলোমিটার, জর্ডান ও লেবাননের সঙ্গে ৩৭৫ কিলোমিটার এবং ফিলিস্তিনের সঙ্গে ৭৬ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে।
নামের উৎপত্তি
‘সিরিয়া’ নামটি প্রাচীন আশুরীয় শব্দ ‘আশুর’ বা গ্রিক শব্দ ‘আসিরিয়া’ থেকে এসেছে। সিরিয়ার প্রাচীন নাম ছিল ইবলা, আরাম, ইবর নাহারি এবং শাম।
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য
সিরিয়ার ছয়টি স্থান ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় রয়েছে—
- দামেশকের প্রাচীন শহর
- আলেপ্পোর প্রাচীন শহর
- পালমিরা
- সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের প্রাচীন গ্রাম
- ক্রাক দে শেভালিয়ার দুর্গ
- প্রাচীন বসরা
প্রাচীন শহরের ইতিহাস
দামেশক এবং আলেপ্পো ( হালব ) বিশ্বের প্রাচীনতম ধারাবাহিক বসবাসযোগ্য শহর। দামেশকে ৯০০০ বছর আগের মানুষের বসতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
লাতাকিয়ার উগারিট এলাকায় আবিষ্কৃত ‘উগারিটিক বর্ণমালা’ পৃথিবীর প্রথম বর্ণমালা হিসেবে পরিচিত।
সূত্র : আল জাজিরা