সিরিয়ায় নতুন প্রশাসন চাইলে তাদের সেনাবাহিনী গঠনে তুরস্ক পূর্ণ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার।
১৫ ডিসেম্বর তুর্কি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হুলুসি আকার বলেন, তুরস্ক ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সামরিক প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার চুক্তি করেছে। সিরিয়ায় একটি সমন্বিত সংবিধান প্রণয়ন, জাতিসংঘের প্রস্তাব ২২৫৪ অনুযায়ী রাজনৈতিক সমাধান এবং মুক্ত নির্বাচনের বিষয়টি তুরস্ক সমর্থন করে।
সিরিয়ায় তুরস্কের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তুরস্ক কোনো স্থানীয় গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল না এবং ভবিষ্যতেও জড়াবে না। তবে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ হলে তুরস্ক নতুন সিরিয়ান প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করতে পারে।
তুরস্ক-সমর্থিত সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি দেশটির বিরোধী দলগুলোর সদস্যদের নিয়ে গঠিত এবং সিরিয়ার অস্থায়ী সরকারের অধীনে পরিচালিত।
হুলুসি আকার তুরস্কের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত ‘ওয়াইপিজি’-র বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। তুরস্কের দাবি, ওয়াইপিজি আসলে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-র শাখা। তবে যুক্তরাষ্ট্র ‘ওয়াইপিজি’কে সমর্থন দিয়ে আসছে এবং ‘আইএস’ মোকাবিলায় সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেসকে (এসডিএফ) অপরিহার্য মনে করে।
তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা ‘আইএস’ ও এসডিএফ নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে থাকা অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করে।
হুলুসি আকার জানান, তুরস্ক সিরিয়ার আল-হোল ক্যাম্প পরিচালনার প্রস্তাব দিয়েছিল, যেখানে ‘আইএস’-এর সদস্য ও তাদের পরিবার রাখা হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র তা প্রত্যাখ্যান করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে কাজ করতে বেশি আগ্রহ দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
২০১২ সালে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা বাড়লে তুরস্ক দামেশকে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে। তবে সম্প্রতি তুরস্ক তাদের দূতাবাস পুনরায় খুলে বুরহান কুর ওগলুকে সেখানে প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর সিরিয়ার ক্ষমতা বদলের পর প্রথমবারের মতো তুরস্কের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল দামেস্ক সফর করে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধান ইব্রাহিম কালিন এবং বিদ্রোহী প্রধান হাইয়াত তাহরির আল শাম এর নেতা আহমাদ আশ শারা ওরফে আবু মুহাম্মদ আল জাওলানি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তুরস্কের এই উদ্যোগ সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
সূত্র: ইনাব বালাদী