ইসলাম ইনসাইট

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে গতি বাড়িয়েছে ইরান

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে গতি বাড়িয়েছে ইরান
ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে গতি বাড়িয়েছে ইরান। ছবি : আল জাজিরা

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের বিরুদ্ধে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়ানোর অভিযোগ তুলে একে ‘অভূতপূর্ব পারমাণবিক বৃদ্ধি’ বলে উল্লেখ করেছে। তারা ইরানকে এই উত্তেজনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র হুঁশিয়ারি বলেছে, ইরানকে পারমাণবিক শক্তি অর্জন থেকে বিরত রাখতে তারা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে।

গতকাল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বৈঠকের আগে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ইরানের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের কোনো বেসামরিক যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। তারা পরিষদকে জানিয়েছে, প্রয়োজনে ইরানের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য তারা প্রস্তুত।

ব্রিটেনের জাতিসংঘের উপ-রাষ্ট্রদূত জেমস ক্যারিওকি বলেন, ‘আমরা সব ধরনের কূটনৈতিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব, যার মধ্যে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়াও অন্তর্ভুক্ত।’

জাতিসংঘের রাজনৈতিক বিষয়ক প্রধান রোজমেরি ডিকারলো পারমাণবিক চুক্তি পুনরুদ্ধারে বিশ্বশক্তি ও ইরানকে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের চুক্তি পুনরুদ্ধার না করা গেলে তা বিশ্বজুড়ে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি বাড়াবে।

ডিকারলো আরও বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ প্রকৃতি নিশ্চিত করা না গেলে তা শুধু আঞ্চলিক নয়, বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’

ইরানের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত আমির সাইদ ইরফানি জানান, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রস্তাব অবৈধ ও উস্কানিমূলক। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের পদক্ষেপের মুখে ইরান কঠোর ও সমুচিত জবাব দেবে।’

জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। এটি ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধতায় পৌঁছেছে, যা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের কাছাকাছি।

পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি, বেসামরিক কর্মসূচির জন্য এত উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রয়োজন নেই। তারা সতর্ক করেছে, আগে কোনো দেশ অস্ত্র উৎপাদনের লক্ষ্য ছাড়া এমন স্তরের সমৃদ্ধকরণ করেনি। তবে ইরান দাবি করেছে, তাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতিসংঘ প্রতিনিধি রবার্ট উড বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে কূটনীতি ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখার সর্বোত্তম উপায়। তবে প্রয়োজনে ইরানকে প্রতিরোধে আমরা সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করব।’

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর শর্ত অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধতা আরোপের বিনিময়ে তাদের ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। তবে ২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর ইরান চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন শুরু করে।

চুক্তি পুনরুদ্ধারে বিশ্বশক্তি একাধিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও ইরানের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore