ইসলাম ইনসাইট

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ধ্বংসপ্রায় স্বাস্থ্যখাত, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ধ্বংসপ্রায় স্বাস্থ্যখাত, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা
যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে ধ্বংসপ্রায় স্বাস্থ্যখাত, বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। ছবি : আল জাজিরা

সুদানের যুদ্ধ সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার পাশাপাশি কেড়ে নিয়েছে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত অসংখ্য মানুষের বেঁচে থাকার শেষ আশাটুকুও। সংঘর্ষে ধ্বংস হয়েছে দেশের বেশির ভাগ স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। হাসপাতাল ও ওষুধের ওপর নির্ভরশীল রোগীরা পড়েছেন এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে।

জুনের শেষ দিকে র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সানজা শহর দখল করলে ইব্রাহিম তাহেরের পরিবার বুঝতে পারে, তাদের সামনে অপেক্ষা করছে কঠিন সময়। দীর্ঘদিন ধরে কিডনি বিকলতায় ভুগছিলেন ইব্রাহিম। শহরের হাসপাতাল বন্ধ হওয়ায় তার নিয়মিত ডায়ালাইসিস থেমে যায়।

ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ জানান, পরিবারের সদস্যরা আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ জোগাড় করে তাকে দানদর শহরের ডায়ালাইসিস কেন্দ্রে নিয়ে যান। তবে আরএসএফের হামলায় হাসপাতালটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। চিকিৎসা থেমে গেলে ইব্রাহিমের জীবন রক্ষার সব আশাও নিভে যায়।

পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে কোনো যানবাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। বাধ্য হয়ে ইব্রাহিমকে একটি খাটিয়ায় শুইয়ে পরিবারের লোকজন কয়েক ঘণ্টা হেঁটে গদারিফ শহরের দিকে রওনা দেন। পথে একটি ট্রাক পেলেও কাঁচা রাস্তায় ঝাঁকুনিতে পথেই মারা যান ইব্রাহিম।

এ গল্প ইব্রাহিমের একার নয়। চলমান সংঘর্ষে অন্তত এক কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে অসংখ্য রোগী রয়েছেন, যারা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ বা হৃদ্‌রোগে ভুগছেন।

পোর্ট সুদানের ডায়ালাইসিস কেন্দ্রগুলোতে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ডায়ালাইসিসের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক রোগী জানিয়েছেন, ওষুধের সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে চিকিৎসা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

যুদ্ধের কারণে দেশের ৮০ শতাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ধ্বংস হয়েছে। ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় রেডিয়েশন থেরাপি এখন আর পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অনেক রোগী চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতে বা পথে মারা যাচ্ছেন।

ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরাও ভয়াবহ অবস্থায় আছেন। কালোবাজারে কিছু ওষুধ পাওয়া গেলেও সেগুলোর দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এই সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তা অপরিহার্য। ডাক্তারেরা জানিয়েছেন, বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য নিরাপদ আশ্রয় এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরি। যুদ্ধরত পক্ষগুলোকে সংঘর্ষ থামিয়ে মানবিক করিডোর তৈরির আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে রোগী, শিশু, গর্ভবতী নারী ও প্রবীণরা চিকিৎসার সুযোগ পান।

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore