সিরিয়ান শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত জার্মান অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তির সংকট তীব্র হবে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে শ্রম ঘাটতি দেখা দেবে।
জার্মানিতে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখ সিরিয়ান শরণার্থী বসবাস করছেন, যাদের বেশিরভাগই ২০১৫ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের সময় দেশটিতে আশ্রয় নিয়েছেন। এটি ইউরোপে সিরিয়ানদের সবচেয়ে বড় কমিউনিটি।
কোলোনের জার্মান ইকোনমিক ইনস্টিটিউট পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, জার্মানিতে প্রায় ৮০ হাজার সিরিয়ান এমন পেশায় কর্মরত যেখানে দক্ষ কর্মীর সংকট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, চিকিৎসা ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি খাত।
গবেষণায় বলা হয়েছে, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে প্রায় ৪ হাজার সিরিয়ান কাজ করছেন, যেখানে ৭০ শতাংশ পদের জন্য দক্ষ কর্মী পাওয়া কঠিন। এছাড়া, দেশটিতে প্রায় ৫ হাজার ৩০০ সিরিয়ান ডাক্তার কর্মরত আছেন, যাদের ফেরত পাঠানো হলে বয়স্কদের যত্নসেবা খাতে বড় ধরনের সংকট তৈরি হতে পারে।
এছাড়া প্রায় ২ হাজার ৪৭০ জন ডেন্টাল ডাক্তার, ২ হাজার ২৬০ জন শিশু শিক্ষা ও যত্নসেবায়, এবং ২ হাজার ১৬০ জন নার্সিং ও স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করছেন। একই সঙ্গে ২ হাজার ১০০ জন বৈদ্যুতিক স্থাপনা এবং ১ হাজার ৫৭০ জন তাপ ও শীতলকরণ প্রযুক্তিতে কর্মরত।
গবেষণার প্রধান ফাবিয়ান সামসারহা বলেছেন, ‘সিরিয়ান কর্মীরা জার্মান অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা দক্ষ জনশক্তির ঘাটতি মেটাতে বড় ভূমিকা রাখছেন।’
অন্য আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, সিরিয়ান শরণার্থীদের ফেরত পাঠালে স্বাস্থ্য, পরিবহন ও লজিস্টিক খাতে শ্রম সংকট আরও প্রকট হবে। যদিও সামগ্রিক অর্থনীতিতে এই প্রভাব বড় না হলেও স্থানীয় অঞ্চল এবং নির্দিষ্ট খাতে এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে।
জার্মানির শ্রমবাজারে সিরিয়ান শ্রমিকদের অংশ ০.৬ শতাংশ, যা প্রায় ২ লাখ ৮৭ হাজার। সিরিয়ান-জার্মান নাগরিকদের অন্তর্ভুক্ত করলে এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ০.৮ শতাংশ।
এদিকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সংসদীয় নির্বাচনকে ঘিরে ডানপন্থী এবং অতিডানপন্থী দলগুলো সিরিয়ান শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর দাবি আরও জোরালো করেছে।
সূত্র: রয়টার্স