সে আবার একথাও বলেছে,
‘যদি পুরোপুরি শরীয়াহর প্রশ্ন আসে, তাহলে শরীয়াহও পাওয়া যাবে না, রাষ্ট্রও না।’
আমরা আগেই বলেছি যে, ইসলাম কোনো রাষ্ট্রকাঠামোর কাছে দায়বদ্ধ না। বরং ইসলাম নিজেই একটা জীবনব্যবস্থা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বিশ্বব্যবস্থা, যেখানে শরীয়াহকে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা হয়ে থাকে। যা শরীয়াহ রাসুল সাঃ থেকে শুরু করে সাহাবা, তাবেইন ও তাবে-তাবেইনসহ পরবর্তী প্রজন্ম বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন।
আমাদের এটিও বুঝতে হবে যে, ইসলাম আধুনিক থিওলজি, প্রগ্রেস, সাইন্স ও টেকনোলজিকে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে কখনোই বাদ দেয়নি, বরং এসব ক্ষেত্রে অনুপ্রানিত করেছে।
এক্ষেত্রে মাহফুজের তথাকথিত স্বাধীন রাষ্ট্রের মানে যদি হয় – ধর্ষককে ধর্ষণের স্বাধীনতা দেয়া, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ব্ল্যাক বাজেট পাস করে জনতার পয়সা মেরে খাওয়া, অবাধে আমার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিরুদ্ধাচারন, তাহলে আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে আল্লাহ তায়ালা কাউকে এমন স্বাধীনতা দেন নি। আর এমন রাষ্ট্র কাঠামোর কাছে ইসলাম জায়গা ভিক্ষা চায় না, যে ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে স্পষ্টই বলা আছে>>
يٰٓاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِى السِّلۡمِ کَآفَّةً وَلَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّيۡطٰنِ اِنَّهٗ لَـکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِيۡنٌ ٢٠٨
হে মু’মিনগণ! ইসলামের মধ্যে পূর্ণভাবে প্রবেশ কর এবং শায়ত্বনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলো না, নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বাকারা-২০৮)
وَمَنۡ يَّبۡتَغِ غَيۡرَ الۡاِسۡلَامِ دِيۡنًا فَلَنۡ يُّقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِى الۡاٰخِرَةِ مِنَ الۡخٰسِرِيۡنَ ٨٥
আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন (জীবনব্যাবস্থা) গ্রহণ করতে চাইবে কক্ষনো তার সেই দ্বীন (জীবনব্যাবস্থা) কবূল করা হবে না এবং আখেরাতে সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (আলে ইমরান -৮৫)
মাহফুজ আলমরা মূলত কিছু ব্যক্তিগত বয়ান তৈরি করে ইসলামবিদ্বেষী আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মতো করে ইসলামকে রাষ্ট্রযন্ত্র থেকে মাইনাস করার পরিকল্পনায় নেমেছে।
মক্কার মুশরিকদের আর তাতারিদের মত খন্ডিত ইসলামের ধারণা তৈরি করে এ দেশে মুসলিমদের মন থেকে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ চিত্রকে মুছে দিতে চাচ্ছে এই মাহফুজ আব্দুল্লাহ টাইপ লোকেরা। এরা ইসলামের ইমোশন নিয়ে খেলে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে, আবার সেই ইসলামকেই হরহামেশা ঠাট্টার পাত্র বানাচ্ছে। কতবড় দুঃসাহস হলে এরা বাংলাদেশের ন্যায় একটি মুসলিম ভূমিতে বসে বলার সাহস পায় “ইসলাম নিপীড়নের অনুষঙ্গ হয়ে যাবে।”
এদের কারণে আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিগত ফ্যাসিজমের চাইতেও ভয়াবহভাবে ইসলামকে ধ্বংস করার চক্রান্ত নতুন করে শুরু হয়েছে। যেমন আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফরম থেকে মেডিকেল, কলেজসহ সবজায়গায় ট্রান্সজেন্ডার শব্দটিকে অপশন হিসেবে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তারমানে এলজিটিবিকিউকে এমন জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে এরা যেমনটা পারেনি বিগত স্বৈরশাসকেরাও।
সমকামীতাকে প্রমোট করার পাশাপাশি অন্যান্য ইসলামবিদ্বেষী প্রকল্প বাস্তবায়নেও তারা মাঠে নামার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। তাই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতকে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে। অন্যথায় মাহফুজ আলমরা দেশকে সম্পূর্ণ সেকুলার রাষ্ট্রে পরিণত করে ফেলবে।
আমরা আবারো স্পষ্টত বলতে চাই, ইসলাম এক পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা, এটার আলাদা কোন ভার্সন নেই, সৌদি ইসলাম, আরবীয় ইসলাম, উপমহাদেশীয় ইসলাম, পাকিস্তানি ইসলাম, বাংলাদেশী ইসলাম বলে যে সব লোকেরা বুদ্ধিবৃত্তিক বেশ্যাবৃত্তি করে চলছে, এদের রুখে দেয়ার কোন বিকল্প নেই।
اِنَّ الدِّيۡنَ عِنۡدَ اللّٰهِ الۡاِسۡلَامُ
নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম। (সূরা আলে ইমরানঃ ০৯)