যুবকদেরকে আখিরাতের চূড়ান্ত পথ থেকে দুরে রাখার অন্যতম কারন হল বন্ধু নির্বাচনে ভূল করা। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
الرَّجُلُ عَلَى دِينِ خَلِيلِهِ فَلْيَنْظُرْ أَحَدُكُمْ مَنْ يُخَالِلُ
মানুষ তার বন্ধুর ধ্যান-ধারণার অনুসারী হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের সকলেরই খেয়াল রাখা উচিত সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে।
(তিরমিজি:২৩৭৮)
একজন মানুষ তার বন্ধুর দ্বারাই প্রভাবিত হয়। সে তার বন্ধুর আইডলজি ধারন করে থাকে। প্রত্যেহ জীবনের কর্মকান্ড, আচার-আচরন, নৈতিকতা তার বন্ধুর দ্বারাই নিয়ন্ত্রত হয়।
বন্ধু নির্বাচনের ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেনঃ
وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتُ بَعۡضُهُمۡ اَوۡلِیَآءُ بَعۡضٍ یَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَ یَنۡهَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡكَرِ وَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّكٰوۃَ وَ یُطِیۡعُوۡنَ اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ اُولٰٓئِكَ سَیَرۡحَمُهُمُ اللّٰهُ اِنَّ اللّٰهَ عَزِیۡزٌ حَكِیۡمٌ ﴿۷۱﴾
আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, তারা সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে; তারাই, যাদেরকে আল্লাহ্ অচিরেই দয়া করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(সূরা তাওবা: ৭১)
মুমিনের বন্ধুত্ব হবে মুমিনের সাথেই, বন্ধুত্ব যদি হয় আল্লাহর পথে চলা সাথির সাথে, তাহলে জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত হবে আল্লাহর সান্নিধ্যে। তাদের অভিভাবক হবে আল্লাহ।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেনঃ
اِنَّمَا وَلِیُّكُمُ اللّٰهُ وَ رَسُوۡلُهٗ وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا الَّذِیۡنَ یُقِیۡمُوۡنَ الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوۡنَ الزَّكٰوۃَ وَ هُمۡ رٰكِعُوۡنَ ﴿۵۵﴾
তোমাদের বন্ধু তো কেবল আল্লাহ, তার রাসূল ও মুমিনগণ- যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং তারা বিনীত।
(সূরা মায়েদা : ৫৫)
যখন বন্ধুত্ব হবে দ্বীনদার উত্তম ব্যাক্তির সাথে, তখন তাদের জীবন থেকে ছড়াবে না জুলুমের আভাস। বরং তাদের থেকে ছড়াবে আল্লাহর রাসুলের আদর্শ, যে আদর্শ সাহাবি রা: ধারন করেছিলেন। তারা দেখিয়েছিলেন ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যাবস্হা, মিটিয়ে দিয়েছিলেন জুলুমের ভিত্তি। দেখিয়েছিলেন সুনালী সেই ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্হা।
আর বন্ধুত্ব যদি হয় আল্লাহর রাসুলের আদর্শের বিপরীতে কোন কাফির মুশরিকের সাথে, তাহলে তাদের কর্মকান্ড হবে আল্লাহর বিপরীতে।
এ ব্যাপারে আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেনঃ
ا یَتَّخِذِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡكٰفِرِیۡنَ اَوۡلِیَآءَ مِنۡ دُوۡنِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ مَنۡ یَّفۡعَلۡ ذٰلِكَ فَلَیۡسَ مِنَ اللّٰهِ فِیۡ شَیۡءٍ اِلَّاۤ اَنۡ تَتَّقُوۡا مِنۡهُمۡ تُقٰىۃً وَ یُحَذِّرُكُمُ اللّٰهُ نَفۡسَهٗ وَ اِلَی اللّٰهِ الۡمَصِیۡرُ ﴿۲۸﴾
মুমিনরা যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধু না বানায়। আর যে কেউ এরূপ করবে, আল্লাহর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। তবে যদি তাদের পক্ষ থেকে তোমাদের কোন ভয়ের আশঙ্কা থাকে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিজের ব্যাপারে সতর্ক করছেন এবং আল্লাহর নিকটই প্রত্যাবর্তন হবে।
(সূরা আলে ইমরান : ২৮)
বন্ধুত্ব আল্লাহর রাসুলের আদর্শের বিপরীতে হলে সমাজে ছড়াবে মদ, জুয়া, নারীবাজী, বাজার সিন্ডিকেট, সুদের মহাজন, চুরি-ডাকাতি ইত্যাদি। তাদের দ্বারা রাষ্ট্রে ছড়াবে নানাবিধ ফাসাদ, গরীবরা হবে আরো গরিব, ধনীরা হবে আরো ধনী, নগরীর মোরে মোরে তৈরী করবে পতিতালয়, জনগনের টাকা লোট করে গড়ে তুলবে বিশাল সম্রাজ্য। রাষ্ট্রে বয়ে যাবে শয়তানের গড়ে তুলা জাহিলিয়াত এর ত্রাস। সুতরাং আমাদের প্রত্যককেই ভেবে দেখা উচিত, আমরা কার সাথে বন্ধুত্ব করছি।