ইসলাম ইনসাইট – ওয়ার এনালাইসিস
যুদ্ধের ধোঁয়া তখনও পুরোপুরি কাটেনি। ঠিক তখনই চেংদু এয়ারক্রাফ্ট কোম্পানির শেয়ারের দাম এক লাফে ৪০ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। তিন দশক আগে প্রথমবার আকাশে ওড়া চীনের J-10 “Vigorous Dragon” এই প্রথমবার সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়ে সফলভাবে ফিরে আসে। যুদ্ধক্ষেত্র ছিল ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত, যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল ভারতের পশ্চিমা প্রযুক্তিনির্ভর বিমান বহর।
৭ মে ভোরবেলা ইসলামাবাদে চীনা কূটনীতিকরা হাজির হন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। টেবিলজুড়ে তখন সাজানো ছিল J-10C যুদ্ধবিমানের ফ্লাইট রেকর্ড, AESA (Active Electronically Scanned Array) রাডারের তথ্য, PL-15 মিসাইল ব্যবহারের বিশ্লেষণ এবং EMO (Electromagnetic Operational Environment) সিগন্যালের ডেটা। চীনা প্রযুক্তির মুখোমুখি ছিল ভারতের Rafale, SCALP মিসাইল, S-400 রাডার এবং AWACS (Airborne Warning and Control System)।
যদিও এখনো সরকারিভাবে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি, তবুও একাধিক গোয়েন্দা তথ্য ও ভারতীয় সামরিক সূত্র জানায় J-10C থেকে ছোঁড়া PL-15 BVR (Beyond Visual Range) মিসাইলের আঘাতে ভারতের একাধিক যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয়েছে। এর পরপরই চেংদু কোম্পানির শেয়ারের দাম নাটকীয়ভাবে বেড়ে যায়।
Stimson Center-এর বিশ্লেষক ইউন সান বলেন, “বাস্তব যুদ্ধের মতো কার্যকর বিজ্ঞাপন আর হয় না।” এই ঘটনাকে চীনের অস্ত্র রপ্তানি ও সামরিক আধিপত্য বিস্তারের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
SIPRI ও IISS-এর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের ৮১ শতাংশ সামরিক সরঞ্জাম আসে চীন থেকে। এর মধ্যে রয়েছে JF-17, J-10, HQ-9, VT-4 ট্যাংক, SH-15 কামান ও Wing Loong ড্রোন যা পাকিস্তানের চীনা প্রযুক্তি নির্ভরতা স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।
চীন-পাকিস্তান সম্পর্ককে বলা হয় “All-Weather Friendship” বা সর্বঋতুর বন্ধুত্ব। এই সম্পর্ক মূলত ভারতের বিরুদ্ধে কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষার লক্ষ্যেই গড়ে উঠেছে। আগে যেসব অস্ত্র ছিল সাধারণ মানের, সেগুলো এখন পরিণত হয়েছে সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য উন্নত প্রযুক্তিতে।
German Marshall Foundation-এর বিশ্লেষক Andrew Small বলেন, “পাকিস্তান এখন চীনের নতুন সামরিক প্রযুক্তি বাস্তবে পরীক্ষার মঞ্চে পরিণত হয়েছে।”
এই সংঘর্ষ ছিল মূলত প্রযুক্তি ও কৌশল কতটা বাস্তবে কার্যকর তারই পরীক্ষাক্ষেত্র। PL-15 মিসাইলের রিয়েল-টাইম গাইডেন্স, AESA রাডার দ্বারা টার্গেট লক, EMO-এর মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংকেত শনাক্ত এবং AWACS ব্যবস্থাকে ব্যাহত করা সব মিলিয়ে এটি ছিল চীনা প্রযুক্তির একটি সফল প্রদর্শনী।
পাকিস্তানের Deputy Chief of Air Operations Aurangzeb Ahmed বলেন, “এক ঘণ্টার এই ঐতিহাসিক ডগফাইট একদিন সামরিক একাডেমিতে কেস স্টাডি হিসেবে পড়ানো হবে।”
অন্যদিকে PL-15 মিসাইলের একটি অবিস্ফোরিত অংশ ভারতের ভূখণ্ডে পড়ে যাওয়ার খবরেই পশ্চিমা গোয়েন্দা মহলে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। লন্ডনের RUSI (Royal United Services Institute) গবেষক Robert Tollast বলেন, “যদি এই তথ্য সত্যি হয়, তবে এটাই হবে চীনের AESA রাডার ও BVR মিসাইলের বাস্তব যুদ্ধে সমন্বিত ব্যবহারের প্রথম প্রমাণ।”
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ভারতের ভেতরে অবস্থানরত পশ্চিমা সামরিক উপদেষ্টারা J-10C এর রাডার সিগন্যাল ও যুদ্ধকালীন পারফরম্যান্স সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহে তৎপর হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে ভারত জানায়, তাদের SCALP মিসাইল সফলভাবে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে নির্ধারিত টার্গেটে আঘাত করেছে। HQ-9 সিস্টেম, যেটি রাশিয়ার S-300 এর আদলে তৈরি, সেটি S-400 এর তুলনায় প্রযুক্তিতে কিছুটা পিছিয়ে এই কারণেই এই মিসাইল ঢুকতে পেরেছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
বৃহস্পতিবার ভারত একাধিক SAM (Surface-to-Air Missile) ও রাডার স্টেশনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। একজন পশ্চিমা কূটনীতিক বলেন, “এটি ছিল পুরোপুরি শক্তি প্রদর্শনের একটি কৌশল যার মূল লক্ষ্য ছিল প্রতিপক্ষের আত্মবিশ্বাস ভেঙে দেওয়া।”
পূর্বের সংঘর্ষ যেমন কারগিল, বালাকোট কিংবা ছোট ছোট সীমান্ত স্কার্মিশ সবকিছুই পরবর্তী কৌশল নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। ভারতের AEW&C (Airborne Early Warning and Control) ঘাটতি, MiG যুদ্ধবিমানের দুর্বলতা, Mirage ও Rafale-এর ব্যবহার এবং ভুল করে নিজস্ব হেলিকপ্টার ধ্বংস (Friendly Fire) সবই ছিল ভারতের শিক্ষা নেওয়ার মতো ঘটনা।
বিশ্লেষকদের মতে এই যুদ্ধ দ্বারা প্রমাণিত যে ভারতের প্রতিরক্ষা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া এখনো ধীরগতির এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় জর্জরিত। আর পাকিস্তান যেহেতু চীনের কাছ থেকে সরাসরি এবং অন্যদের তুলনায় দ্রুত সরবরাহ পায় এবং সামরিকভাবে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাই প্রতিক্রিয়াও দ্রুত হয় এবং তারা চাইলে স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হওয়ার শক্তি রাখে।
শেষ কথা হলো যুদ্ধে কেবল অস্ত্র নয়, বরং প্রস্তুতি, নেতৃত্ব এবং বাস্তব কৌশল মিলেই বিজয় নির্ধারিত হয়। এই যুদ্ধে চীনের প্রযুক্তি আর পাকিস্তানের নির্ভুল প্রতিক্রিয়া ভারতের আকাশে একটি নতুন বাস্তবতা তৈরি করে দিয়েছে যা স্বল্প সময়ে ভারতের ভীত নাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে শান্তি চুক্তি করার টেবিলে টেনে নিয়ে এসেছে।