ইসলাম ইনসাইট – হিন্দুত্ববাদ
ইদানীং দেখা যাচ্ছে, কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশেই গোপাল ভাঁড় কার্টুন বেশি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে শিশু-কিশোররা খুব বেশী করে এই কার্টুন দেখছে। এই কার্টুনে প্রায়ই এমন কিছু কথা বা বার্তা বলা হয়, যেগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি করে। আর এসব কথাবার্তা বলানো হয় মূল চরিত্র গোপালের মুখ দিয়ে। অন্যদিকে গোপালকে উপস্থাপন করা হয় “বুদ্ধিমান” এবং “চতুর” একজন মানুষ হিসেবে যেন গোপাল যা বলে তাই ঠিক!
এই কার্টুনে প্রতিবারই নবাব চরিত্রকে দেখানো হয় বোকা, লোভী, আগ্রাসী এবং শাসনের অযোগ্য একজন মুসলিম শাসক হিসেবে। বিষয়টি এমনভাবে উপস্থাপিত হয় যে, মুসলিম শাসকদের শাসনামলে প্রজারা থেকে শুরু করে রাজাও চরমভাবে নিপীড়িত ছিল; যা দেখে স্পষ্ট বোঝা যায় এটি কেবল মজা বা বিনোদনের জন্য তৈরি করা হয়নি বরং এর পেছনে একটি সুপরিকল্পিত উদ্দেশ্য আছে। তা হলো মুসলিমদের ঐতিহাসিক ভাবমূর্তিকে খাটো করা এবং কোমলমতি শিশুদের মনে ছোটবেলা থেকেই ইসলামের প্রতি নেতিবাচক ধারণা তৈরি করা।
একটি বিষয় খুবই চোখে পড়ে কার্টুনে প্রায়ই এমনভাবে দেখানো হয় যে নবাব নিজেরই অধীন রাজ্য আক্রমণ করছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক এবং ইতিহাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বাস্তবে যদি কোনো নবাব সেই রাজ্য থেকে কর বা সুবিধা পেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি নিজের রাজ্যই আক্রমণ করবেন কেন?
সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হলো, বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে এই কার্টুনের প্রভাব ধীরে ধীরে বাড়ছে। ফলে শুধু শিশু নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও ভুল ধারণা ছড়িয়ে পড়ছে যা আমাদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নিরাপত্তার জন্য বড় ধরণের হুমকি তৈরী করছে।
কার্টুন বা শিশুতোষ বিনোদনের আড়ালে মুসলিম ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা এবং “মজার ছলে” শিশুদের মনে তা ঢুকিয়ে দেওয়া অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিন্তু উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা বাংলাদেশে এটাই করতে চাচ্ছে। এর মাধ্যমে তাদের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে চায়। এখন সময় এসেছে সচেতনভাবে ভাবার, প্রশ্ন তোলার এবং শিশুদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সুস্থ বিকল্প বিনোদন তৈরী করার। পাশাপাশি গোপাল ভাঁড় এর মতো যেসব উগ্র হিন্দুত্ববাদী কার্টুন আছে, সেগুলোকে বাংলাদেশে দ্রুত নিষিদ্ধ করতে হবে।