ভারতের হিমাচল প্রদেশে দুই ভাই প্রকাশ্যে একজন নারীকে বিবাহ করে। এতে তারা অনেক গর্বিত!এটা কেবলমাত্র বিকৃত প্রথার পরিচয় নয়। বরং হিন্দুত্ববাদের নৈতিক দেউলিয়াত্বের জ্বলন্ত উদাহরণ।
এই প্রথার নাম“জোড়িদারা”।এতে একজন নারীকে একাধিক ভাইয়ের যৌথ স্ত্রী বানানো হয় ভূমির বিভাজন ঠেকানোর নামে।তারা একে বলে ‘ঐতিহ্য!’ অথচ বাস্তবে এটি পশুত্বের চেয়েও অধম। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই প্রথা ভারতীয় আইনেই বৈধ।
এটাই সেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীতার নিকৃষ্ট যেখানে তাদের অনুসারীরা ইসলামকে কটাক্ষ করে। রাসূল ﷺ-এর একাধিক বিবাহ নিয়ে ব্যঙ্গ করে। অথচ নিজেরা একজন নারীকে দুই ভাইয়ের যৌথ স্ত্রী বানানোকে গর্বের বিষয় বলে প্রচার করে!এই বিকৃত ঐতিহ্য শুধুই বিকৃতি নয়।বরং এটি মানুষের স্বভাব জাত কৃষ্টি কালচারের বিরুদ্ধে এক নীরব যুদ্ধ।
এব্যাপারে ইসলাম কি বলে?
ইসলামে বহুবিবাহ আছে।কিন্তু তা সীমিত, শর্তযুক্ত এবং ইনসাফের ভিত্তিতে করতে হয়। আল্লাহ বলেন:
فَانكِحُوا مَا طَابَ لَكُم مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنَىٰ وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تَعْدِلُوا فَوَاحِدَةً
তোমরা পছন্দসই নারীদেরকে বিবাহ কর দুই, তিন বা চার পর্যন্ত। কিন্তু যদি আশঙ্কা করো যে ইনসাফ করতে পারবে না, তবে একজনই যথেষ্ট।(সূরা আন-নিসাঃ আয়াত ৩)
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর একাধিক বিবাহ ছিল শুধু পারিবারিক নয়। বরং রাজনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও শিক্ষামূলক প্রয়োজন থেকেই। প্রত্যেকটি বিবাহ ছিল উদ্দেশ্যপূর্ণ এবং নারীর মর্যাদা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় ছিল এক একটি মাইলফলক।
হিন্দুত্ববাদে “সতীদাহ” ছিল এমনই এক পৈশাচিক প্রথা।যেখানে স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে সতী বানানোর নামে জীবন্ত আগুনে ফেলা হতো। এখনো ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শত শত নারী ধর্ষিত হয় পৈশাচিক রীতির নামে।গরুর সাথে, গাছের সাথে, এমনকি মৃতের আত্মা তাড়াতে নারীকে বিয়ে দেয়া হয়!অথচ এই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরাই মুসলমানদের বলে বর্বর?
ইসলামেই আছে নারীর প্রকৃত মর্যাদা
ইসলামে নারী কখনো পণ্য নয়,ভোগের বস্তু নয়।বরং মা, বোন, কন্যা, স্ত্রী—সর্বাবস্থায় সম্মানিত। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন,
এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.), মানুষের মধ্যে আমার সদ্ব্যবহারের সর্বাপেক্ষা অধিকারী ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বলেন, এর পরও তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তার পরও তোমার মা। সে বলল, এরপর কে? তিনি বলেন, এরপর তোমার পিতা। (মুসলিম: ৬৩৯৪)
ইসলামই প্রথম নারীদের দিয়েছে উত্তরাধিকার,ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকার,এবং বিবাহে নারীর সম্মতির বাধ্যবাধকতা।
হিন্দুত্ববাদের বেহায়াপনা ও দ্বিমুখিতা
মুসলিম নারীরা পর্দা করলে বলা হয় গোঁড়ামি। কিন্তু এক নারীকে দুই ভাইয়ের যৌথ স্ত্রী বানানো।তাদের কাছে ঐতিহ্য! এই দ্বিমুখিতা শুধু ভন্ডামিই নয়। বরং এটি এক ভয়ংকর হিন্দুত্ববাদী সাংস্কৃতিক ক্যান্সার।ধর্ম ব্যবসায়ী হিন্দুত্ববাদী গুরুদের অনেকে ধর্ষণ মামলায় জেল খাটছে।তবুও উগ্র হিন্দুত্ববাদী এই দল মুসলমানদের রাসূল ﷺ কে অপমান করতে মুখে ফেনা তুলছে।
আমাদের করণীয়?
আমাদের উচিত তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া। আল্লাহ বলেন –
وَقُلْ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا
বলুন! সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হবারই। (সূরা আল – ইসরাঃ ৮১)
আজ হিন্দুত্ববাদের বিকৃত রূপ স্পষ্ট। যেখানে এক নারীকে একাধিক পুরুষের সঙ্গে বিয়ে করার মাধ্যমে নারীর সম্মানহানী করা হয়, সেখানে এর বিপরীতে ইসলাম নারীর সম্মান, ইনসাফ ও পবিত্রতার এক অমর আলোকস্তম্ভ। তাই আসুন ইসলামের সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেই। আমাদের নারীদেরকে এই বিকৃত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করি।