ইসলাম ইনসাইট

গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়া-ইসরায়েল সংঘাতের আদ্যোপান্ত

গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়া-ইসরায়েল সংঘাতের আদ্যোপান্ত
গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়া-ইসরায়েল সংঘাতের আদ্যোপান্ত। ছবি : আনাদোলু

মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ গোলান মালভূমি দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে ইসরায়েল অঞ্চলটি দখল করে এবং ১৯৮১ সালে একপাক্ষিকভাবে এটি নিজেদের ভূখণ্ড বলে ঘোষণা করে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই এই পদক্ষেপকে স্বীকৃতি দেয়নি।

গোলান মালভূমি ইসরায়েলের জন্য কৌশলগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি দেশটির পানি সরবরাহের এক-তৃতীয়াংশ জোগান দেয়। পাশাপাশি দামেশকের নিকটবর্তী হওয়ায় এটি সামরিক এবং গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্যও অপরিহার্য।

১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ১৯৭৪ সালে ইসরায়েল ও সিরিয়ার মধ্যে একটি বিচ্ছিন্ন এলাকা প্রতিষ্ঠার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, ওই এলাকা সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের অংশ হিসেবে গণ্য হবে এবং এখানে ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি সীমিত থাকবে।

সম্প্রতি ইসরায়েল চুক্তিটি লঙ্ঘন করে বিচ্ছিন্ন এলাকা দখল করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, এই এলাকা পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এটি স্পষ্ট সীমা লঙ্ঘন।

গোলান মালভূমির বিচ্ছিন্ন এলাকায় কুনেইত্রা, হামিদিয়া, জাবাতা আল-খাশাব এবং আল-কাহতানিয়া নামে কয়েকটি সিরীয় গ্রাম রয়েছে। এসব গ্রামে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সেনারা স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে থাকা ইউএনডিওএফ বাহিনী এখনো এই এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাহিনীতে প্রায় ১,৩০৯ জন সদস্য রয়েছেন, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ এসেছে নেপাল, উরুগুয়ে, ভারত, ফিজি এবং কাজাখস্তান থেকে।

ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এই দখলের নিন্দা জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলের সামরিক শক্তি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগীদের সমর্থনে এই দখল কার্যকর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ।

বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ শুধু সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত নয়, এটি মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সংকট নিরসনের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore